আলোর ফেরিওয়ালা
-পলান সরকার প্রয়াণে, স্বরণে,সম্মানে একটি কবিতা উৎসর্গ!
শরৎ এর কাশফুলের ন্যায়,
আবির্ভাব হয়েছিলো তোমার,
প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের দায়,
বেড়ে উঠছিলো এক বইপাগল “ বাগাতিপাড়ার ”।
বৃক্ষছায়ার ন্যায় পিতাকে অনাকাঙ্খিতভাবে হারালে শৈশবে,
দ্বার বন্ধ পড়ালেখার অর্থের সংকটে,
নূতন সূর্যোদয় সব শেষের পর,
মা আদর করে ডাকতেন – “ পলান ” ; পলান সরকার।
যৌবনে ভিড়েছিলে তুমি যাত্রাদলে,
অভিনয় করতে ভাড়েঁর চরিত্রে,
বিস্তর দর্শক হাসাতে,
মন্ঞ্চের পেছন হতে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ বলে দিতে,
যাত্রার পান্ডুলিপি হাতে লিখে কপি করতে,
বই পড়ার নেশা এভাবেই জাগ্রত হতে থাকে তোমাতে।
তারপর সূচনা হলো, “বিনে পয়সায় বই বিলি ”-এক অভিনব আন্দোলনের,
দিতে বই উপহার সেরা মেধাবীদের,
প্রত্যেহ ঘুম হতে উঠে,
কাধে ঝোলাভর্তি করে,
মাইলের পর মাইল হেটে,
গ্রাম হতে গ্রামান্তরে,
পৌছে দিতে বই হাতে হাতে,
প্রত্যেক পাঠকের দোরগোড়াতে।
নেই কোনো পদবী, নেই কোনো ডিগ্রী,
জীবন সায়ান্হে বার্ধক্য তোমাকে নোয়াতে পারেনি,
অশিক্ষা-অজ্ঞানতা দূরীকরণের অভিপ্রায়ে,
পরিণত হয়েছ সুরসিক-জীবনবাদী উজ্জ্বল প্রদীপে।
চালকলে হালখাতার বকেয়া পরিশোধ করত যারা,
বিনিময়ে বই উপহার পেত তারা,
নূতন জুটি হিসেবে সংসার বাধত যারা,
বিয়ের দাওয়াতে শুভেচ্ছা উপহার বই পেত তারা।
বইপ্রেমী পাগল হায়,
পেয়েছ আন্ঞ্চলিক সম্মোন্ধন “ বইওয়ালা দুলাভাই ”,
সংগ্রামে লিপ্ত ৩০ বছর যাবৎ তৈরী করতে পাঠক
পেয়েছ বিস্তর সম্মাননা, “ একুশে পদক ”।
পলান সরকার;
তুমি বাংলার বাতিঘর।
তুমি স্বপ্নের কাবুলিওয়ালা।
তুমি আলোর ফেরিওয়ালা।
৯ই সেপ্টেম্বর,১৯২১ – ১ লা মার্চ,২০১৯
তোমার প্রয়াণে ব্যাথিত মন ?
শুক্রবার, বিকেল ০৫ঃ৩৬ ঘটিকা